পারকিনস ডিজিজ

পারকিনসন’স ডিজিজ কি
পারকিনসন’স ডিজিজ একটি দীর্ঘস্থায়ী ও প্রগতিশীল স্নায়ুবিক রোগ, যা মূলত মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশের স্নায়ুকোষের ক্ষয় বা ধ্বংসের কারণে ঘটে। এই রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো শরীরের নড়াচড়ার সমস্যা, বিশেষত গতিশীলতা ও সমন্বয়ের সমস্যা। পারকিনসন’স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ করতে কষ্ট অনুভব করেন।
পারকিনস ডিজিজের কারণ
পারকিনসন’স ডিজিজ মূলত মস্তিষ্কের বাসাল গ্যাংলিয়া নামক অংশে ডোপামিন উৎপাদনকারী স্নায়ুকোষের ধ্বংসের কারণে হয়। ডোপামিন হলো একটি নিউরোট্রান্সমিটার, যা মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় এবং শরীরের মাংসপেশীর গতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ করে। ডোপামিনের অভাবে শরীরের চলাচল স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।
পারকিনসন’স রোগের সঠিক কারণ এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি, তবে জিনগত এবং পরিবেশগত কারণে এটি ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
পারকিনসন’স ডিজিজের লক্ষণ
- কম্পন : হাত, পা বা শরীরের অন্যান্য অংশে ধীরে ধীরে কম্পন হওয়া। এটি পারকিনসন’স রোগের প্রথম লক্ষণ হতে পারে।
- ধীরগতি : শরীরের নড়াচড়া ধীর হয়ে যায়, যার ফলে চলাফেরা, দাঁড়ানো বা বসা কঠিন হয়ে পড়ে।
- কঠিন বা শক্ত পেশী : শরীরের পেশী শক্ত হয়ে যায়, বিশেষত কাঁধ, পা বা ঘাড়ে।
- ভারসাম্যের সমস্যা: শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে সমস্যা হয়, ফলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- মুখের অভিব্যক্তি কমে যাওয়া: অনেক সময় পারকিনসন’স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখে অভিব্যক্তি কমে যায়, যাকে "মাস্কড ফেস" বলা হয়।
- হাতে লেখার সমস্যা: হাতের লেখা ছোট হয়ে যেতে পারে, যা পারকিনসন’স রোগের আরেকটি লক্ষণ।
সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত থেরাপির মাধ্যমে পারকিনসন’স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘকাল স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।